ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

‘মন্ত্রীর ছেলের সঙ্গে দেখা না করায়’ বিদ্যুৎ অফিসে হামলা-ভাঙচুর

২০২৩ আগস্ট ৩০ ১৬:০০:১৮
‘মন্ত্রীর ছেলের সঙ্গে দেখা না করায়’ বিদ্যুৎ অফিসে হামলা-ভাঙচুর

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসের (নেসকো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবি চন্দ্র দাস।

তবে মন্ত্রীর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তাঁর নাম ব্যবহার করে কেউ অন্যায় কাজ করলে এর দায় তাঁর নয়।

হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী রবি চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে ডেকে পাঠান। আমি কেন তাঁর ডাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাইনি, এই জন্য আজ (মঙ্গলবার) অফিসে এসে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল আমার ওপর চড়াও হন।’

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমাকে বলেন, বাইরে থেকে চাকরি করতে আসিস। তোর কোন বাপ তোকে আজ বাঁচাবে তাই দেখব—এই বলে আমার ওপর হামলা করে এবং অফিস ভাঙচুর করে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওইদিন বেলা ২টার দিকে কালীগঞ্জ নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) অফিসে যান উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ও তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নূরুন্নবীর নেতৃত্বে আট-দশজন। তাঁরা নির্বাহী প্রকৌশলী রবি চন্দ্র দাসের কক্ষে ঢুকে জানতে চান, মন্ত্রীর ছেলে ডাকার পরও তিনি কেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাননি। এত সাহস তিনি কোথায় পেলেন।

এই সময় রবি চন্দ্র দাসকে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ জামায়াত-শিবিরের লোক আখ্যা দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ২০ মিনিটের মধ্যে মন্ত্রীর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদের কাছে ক্ষমা চেয়ে আসতে বলেন তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁরা অফিসের আলমারি, ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ভাঙচুর করেন। এ সময় উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও কর্মচারীদেরও মারধর করা হয়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমি তো কিছুই জানি না ভাই। কেন জানি এরা আমার নামে ষড়যন্ত্র করতেছে। আমি তো কিছুই বুঝতেছি না। আমি আজ দুপুরে আমার বন্ধুর ছোট ভাইয়ের বউ ভাতের দাওয়াতে গেছিলাম। আর আমি যে ওখানে গিয়ে ভাঙচুর করেছি, তার কোনো ছবি আছে তাদের কাছে? আমি বিদ্যুৎ অফিসে যাইনি।’

সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদও অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে হবে কেন? আর আমি তাঁকে ডাকছি তার কোনো প্রমাণ আছে? আমার বাবা একজন মন্ত্রী আর আমি একটা দায়িত্বের জায়গা থেকে এ ধরনের কাজ কেন করব? তিনি যে সরকারবিরোধী লোক, তা তাঁর বক্তব্যেই বোঝা যায়।’

অফিস ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘কেউ যদি আমার নাম ভাঙায়, সেই দায় কি আমার?’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি জানি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ভাঙচুরের বিষয়টি শুনেছি। তবে অফিশিয়ালি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।’

মার্কেট আওয়ার/মোর্শেদ

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর