‘নো ডিভিডেন্ড’-এর শেয়ারের রেকর্ড দৌড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড ৩০ জুন, ২০২৫ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। সাধারণত ডিভিডেন্ড না দেওয়ার খবর বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে এবং শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র—ডিভিডেন্ড না দিয়েই কোম্পানিটি সপ্তাহ শেষে দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে।

ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের ক্লোজিং দর ৬৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে ৯৩ টাকা ৯০ পয়সা, অর্থাৎ এক সপ্তাহে ৩০ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪৮.৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে শেয়ারটির দাম।

ডিভিডেন্ড না দেওয়ার ঘোষণায় প্রথমে বাজারে কিছুটা নেতিবাচক সাড়া পড়লেও বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ দ্রুত ঘুরে যায় কোম্পানির প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের দিকে। সেখানে কোম্পানিটি দেখিয়েছে চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি।

এই সময়ে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের প্রতি শেয়ারে আয় (EPS) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৮৬ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৮ পয়সা লোকসান। এছাড়া প্রতি শেয়ারে নিট সম্পদমূল্য (NAV) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ২৪ পয়সা, যা ৩০ জুন, ২০২৪-এর ১ টাকা ৩৮ পয়সা থেকে প্রায় ২০৭ শতাংশ বেশি।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, এই উল্লেখযোগ্য ইপিএস বৃদ্ধির মূল কারণ ১২ কোটি ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ টাকার নন-অপারেটিং ইনকাম (অ-পরিচালন আয়) বৃদ্ধি।

২৭ অক্টোবর ডিভিডেন্ড ঘোষণা হওয়ার পরদিন থেকেই শেয়ারটিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়। ওই দিন ডিএসই কোম্পানিটির লেনদেনে কোনো মূল্যসীমা (price limit) আরোপ করেনি। ফলে শেয়ারটির দাম ২৩.১৯ শতাংশ বেড়ে ৭৮ টাকা ১০ পয়সা হয়।

এরপর ধারাবাহিকভাবে দাম বাড়তে থাকে এবং ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) শেয়ারটির ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৯৩ টাকা ৯০ পয়সায়, যা ছিল সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা (৯.৯৫%)।

কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ৩ কোটি ২ লাখ। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ডিভিডেন্ড না দেওয়ার পেছনে ব্যবসা সম্প্রসারণে পুনঃবিনিয়োগের ইঙ্গিত থাকতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।

তবে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, দাম বৃদ্ধির পেছনে একটি প্রভাবশালী চক্র সক্রিয়। তাই বিশেষজ্ঞরা নতুন বিনিয়োগকারীদের সতর্কভাবে এন্ট্রি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

বশির/