ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

পর্যটকদের জন্য সুখবর

২০২৩ সেপ্টেম্বর ২৯ ১১:১৬:২৫
পর্যটকদের জন্য সুখবর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০ ধরনের রাখাইন উপকরণ এবং রাখাইনদের কৃষ্টি-কালচারের ২০ ধরনের স্থিরচিত্র প্রদর্শণের জন্য উপস্থাপন করে কলাপাড়ার রাখাইন পল্লী মিশ্রিপাড়ায় ‘রাখাইন জাদুঘরের’ যাত্রা শুরু হয়েছে। রাখাইন মংলাচিং ব্যক্তি উদ্যোগে এই জাদুঘর নির্মাণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। জাদুঘরের মধ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

রাখাইন তালপাতায় পাতায় লেখা পুঁথি। বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষুদের খাবার সরবরাহ করতে ব্যবহৃত এক ধরনের কাঠের পাত্র। শূকরসহ বন্য প্রাণী শিকারের জন্য লেজসহ বিভিন্ন অস্ত্র। ভারী পিতলের ঘণ্টা। হরিণসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর শিংসহ মাথার হাড়। ধান এবং চাল থেকে চাল তৈরির জন্য হরিণের চামড়া পুরানো তাঁতের কাঠের কল। সঙ্গীত শিক্ষার বিভিন্ন সারিবদ্ধ উপকরণ।

দেয়ালে আঁকা প্রথম রাখাইন রাজা চন্দ্রসূর্য এবং শেষ রাজা মহাথামান্দার ছবি তুলে ধরা হয়েছে। ১৭৮৪ সালে প্রথম পর্যায়ে রাখাইন রাজ্য থেকে যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর কিভাবে ৫০টি পরিবার সাগর পাড়ি দিয়ে রাঙ্গাবালী ও কুয়াকাটার বিচ্ছিন্ন তৃণভূমিতে চলে যায়।

পরবর্তীতে আরও ১২০ পরিবারের আগমনদৃশ্য। জঙ্গল কেটে টংঘর তৈরির দৃশ্য। বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষার দৃশ্য। বৃটিশ সরকারের সঙ্গে বাকেরগঞ্জে উপস্থিত হওয়া। ধর্মীয় বিভিন্ন রীতি পালনের দৃশ্য। অন্তেষ্টিক্রিয়ার প্রতিচ্ছবিসহ ষাটের দশকে বন্যায় রাখাইনদের মৃত্যুর দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা রাখাইন মংলাচিং জানান, অন্তত ২০ লাখ টাকা ব্যয় করে নিজস্ব জমিতে স্থাপনা করে তিনি রাখাইনদের ব্যবহৃত আড়াই শ’ বছরের পুরনো হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদর্শনের সুযোগ করে দিলেন। পাশাপাশি আদিবাসী রাখাইনদের ঐতিহ্য-ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলেন।

তিনি বলেন, প্রবীণ রাখাইনরা এসব উপকরণ বাড়িতে সংরক্ষণ করে আসছিলেন, যা জাদুঘরে সংগৃহীত করা হলো। ফলে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা রাখাইন পল্লীতে বৌদ্ধবিহার প্রদর্শনের পাষাপাশি রাখাইন জাদুঘর দর্শণের সুযোগ পাবেন। ক্রমশ বিভিন্ন উপকরন সংগ্রহ করে জাদুঘরের সংগ্রহশালা আরও সমৃদ্ধ করার কথা জানালেন প্রতিষ্ঠাতা মংলাচিং।

সাগর পারের জনপদ কলাপাড়ার রাখাইনদের ব্যবহারের এসব জিনিসপত্র মানুষ এখনও খুঁজে বেড়ায়। রাখাইনদের নিত্যকাজের ব্যবহারে এখন এসব তেমন একটা লাগছে না। তারপরও রাখাইনদের অনেকের বাড়িতে অরক্ষিত অবস্থায় এসব পুরনো জিনিসপত্র ছিল। প্রবীণরা রেখেছেন স্বীয় কীর্তির চিহ্নি হিসেবে। যা দেখে কলাপাড়ায় আগত লোকজন জানতে পারত এই জনপদের অনেক অজানা কাহিনী। আগতরা শুনতে চায় আদিবাসীদের সেকালের জীবনযাত্রা। হিংস্র শ্বাপদ-শঙ্কুল জনপদ কিভাবে হয়েছে বাসযোগ্য। কুয়াকাটায় আসা পর্যটকরা এসব দেখার জন্য, জানার জন্য ঘুরে বেড়ায় রাখাইন পল্লীতে।

এখন জাদুঘর পরিদর্শন করে রাখাইনদের ভিন্ন ধরনের বৈচিত্রময় জীবন-যাপনের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পর্যটকরা জানার সুযোগ পাবেন। এই রাখাইন জাদুঘর উদ্বোধনকে ঘিওে রাখাইন পল্লী মিশ্রিপাড়ায় বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। রাখাইন তরুণিরা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশ করেন।

মার্কেট আওয়ার/তারিকুল

পাঠকের মতামত:

লাইফ স্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফ স্টাইল - এর সব খবর



রে