ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্লোর প্রাইস তুলে ফাঁয়দা লুটতে চায় একটি স্বার্থান্বেষী গ্রুপ

২০২২ নভেম্বর ২১ ১৫:৩৮:০১
ফ্লোর প্রাইস তুলে ফাঁয়দা লুটতে চায় একটি স্বার্থান্বেষী গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করার একমাত্র পথ এখন ফ্লোর প্রাইস। এই ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্যও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করা। কিন্তু এখন প্রকাশ্যে না বললেও নানাভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার বিষয়ে। তবে ফ্লোর প্রাইস না তোলার ব্যপারে এখনো দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসির ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে থাকায় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ খুলে বলতে পারছে না। কিন্তু বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের বাজার থেকে সরিয়ে সাইড লাইনে অবস্থান করছে। আবার শেয়ারবাজারে মধ্যস্থাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্রুপিং করে ট্রেড হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারকেও ফ্লোর প্রাইসে নামানোর চেষ্টা করছে, এমনই অভিযোগ করছেন বড় বড় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের বিনিয়োগকারীরা।

এরই প্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন ধরে এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ব্যাপক সেল প্রেসার দেখা যাচ্ছে। যা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম ফ্লোরে নামানোর মতো নিচু চিন্তার কাজ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

প্রায় সব কোম্পানিই এখন ফ্লোর প্রাইসে

কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারকে ঘিরে শেয়ারবাজারে লেনদেন হচ্ছে। এ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার সেল প্রেসারের মাধ্যমে ফ্লোর প্রাইসে নামানো হলে, সবগুলো কোম্পানির শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসবে। এতে করে শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্ঠি হবে। আর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠি-এমন অভিযোগ বাজার সংশ্লিষ্টদের।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ঘুরে জানা গেছে, সবগুলো কোম্পানির শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসে নামানো হলে বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত দিতে বাধ্য হবে। আর বিএসইসি বাধ্য হয়ে হয়তো ফ্লোর প্রাইস তুলে দিবে অথবা নতুন করে সার্কিট ব্রেকার বেঁধে দিবে। এতে করে সুযোগ সন্ধানীরা আরও কম দামে শেয়ার কিনে নিজেদের ফায়দা লুটতে পারবে।

ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে পথে বসবে বিনিয়োগকারীরা

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফ্লোর প্রাইস তুলবে না বলে আজও সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে। বিএসইসির এই সিদ্ধান্তুকে সাধুবাদ জানিয়েছে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টারা।

তবে অনেকে বলছেন শেয়ারবাজারকে নিজের গতিতে চলতে দেওয়া উচিত। এভাবে আর কতদিন ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দিয়ে শেয়ারবাজারের গতি রোধ করবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার পর তিন মাস শেয়ারবাজার ভালো ছিল। লেনদেন তিন হাজার কোটি টাকাও হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এই টাকাগুলো কোথায় গেলো। কারা এই টাকা ফ্রি করে বসে আছেন। কেনই বা বসে আছেন? এই বিষয়গুলো তদন্ত করা প্রয়োজন।

অনেক ব্রাকারেজ হাউজও ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কথা বলছেন। তাদের এ দাবির বিষয়ে অধ্যাপক আল আমিন বলেন, যারা এখন ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে বলছেন, তাদের বিনিয়োগের অবস্থা দেখা প্রয়োজন। কারণ তাদের এখন বাজারে বিনিয়োগ নেই। তারা এখন সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে তারা আরও কম দামে শেয়ার কিনে লাভে বিক্রি করতে পারবেন।

কিন্তু এখনই ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পথে বসে যাবে। কারণ ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে মার্জিন বিনিয়োগকারীদের ফোর্স সেল আসবে। এতে করে তারা ফোর্স সেল দিতে বাধ্য হবে। যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়ে দিবে বলে মনে করেন অধ্যাপক আল আমিন।

ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে