ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বন্ধ ইমাম বাটনের শেয়ারে কারসাজি!

২০২৩ মে ৩১ ১৯:৪৪:৪৮
বন্ধ ইমাম বাটনের শেয়ারে কারসাজি!

হাবিবুর রহমান: শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যা স্বল্পমূধনী ও লোকসানী প্রতিষ্ঠান। কোনো কারণ ছাড়াই কোম্পানিটির শেয়ার দরে সম্প্রতি তেজিভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আজ বুধবার সপ্তাহের (৩১ মে) কোম্পানিটির শেয়ার দর লেনদেনের শুরুতেই বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে। তবে কিছুক্ষণ পরই বিক্রেতাদের চাপ বড়লে হল্টেড ছুটে যায়।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সহসা উৎপাদন চালু হওয়ার কোন তথ্যও নেই। এমন একটি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে একটি চক্র কারসাজিতে নেমেছে। ওই কারসাজির চক্রের সঙ্গে কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরাও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইমাম বাটনের শেয়ার নিয়ে কারসাজির বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নজরে রয়েছে বলে কমিশনের পদস্থ এক কর্মকর্তা জানান। তিনি জানান, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর আগেও কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে প্রাথমিকভাবে কারসাজির প্রমাণ পেয়েছে। ২০২২ এর জুলাই মাসে এই কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে বিএসইসি, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যেখানে বহু মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার মাসের পর মাস ফ্লোর প্রাইসে অবিক্রিত অবস্থায় রয়েছে, সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই বন্ধ এই কোম্পানিটির শেয়ারদর এভাবে বাড়া স্বাভাবিক নয়। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর দুর্বলতার কারণে এসব লোকসানি ও ডিভিডেন্ড না দেয়া কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি চক্র মেতে উঠেছে। তাদের কারসাজির ফাঁদে পড়ে পুঁজি হারাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ফলে শেয়ারবাজার অস্থিরতার আবর্ত থেকে বের হতে পারছে না।

ইমাম বাটনের কোম্পানি সচিব গৌতম মার্কেট আওয়ারের প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের কারখানা বন্ধ রয়েছে। ৩-৬ মাসের মধ্যে উৎপাদন শুরু হওয়ার কোনো খবর মালিক পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। কিন্তু তারপরও ২০-২২ টাকার শেয়ার ১৩৫ টাকায় কেন বিক্রি হচ্ছে তা আমাদের অজানা। কোনো কারণ ছাড়াই কোম্পানিটির শেয়ারদর অস্বাভাবিক পর্যায়ে লেনদেন হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত হয় ইমাম বাটন। চট্টগ্রামভিত্তিক কোম্পানিটি শুরু থেকে পোশাক খাতের জন্য বোতাম তৈরি করে আসছে। কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ার সংখ্যা ৭৭ লাখ। যার পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ৭৭ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৬০.৯১ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর ৩০.০৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। বাকি ৯.০১ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে।

কোম্পানির সর্বশেষ বোর্ড সভায় হয় ২০২০ সালে। সেই বছরের এপ্রিল মাস থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে কোম্পানিটির।

কোম্পানিটির ডিভিডির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এর ডিভিডেন্ড ইতিহাস অত্যন্ত নাজুক ও খারাপ। ২০১০ সালের পর দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে আসছে অর্থাৎ কোন প্রকার ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির নেগেটিভ রিজার্ভ হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নেট অ্যাসেট ভ্যালু কমতে কমতে ৫ টাকা ৮১ পয়সায় নেমেছে। লোকসানের কারণে কারণে কোম্পানিটির পিই রেশিও নগেটিভ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

শেয়ারনিউজ, ৩১ মে ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে